টুসু'র আসল ইতিহাস
কথিত আছে টুসু একমাস বাপের ঘরে আর এগারো মাস শ্বশুর ঘরে থাকে।
কৃষক কুড়মির শুধু পৌষমাসে ধান খামারে থাকে। আর মাঘের পয়লা দিনেই হালচার করে জমির ইশান কোনে স্থাপন করা হয় ধান বীজ, আষাঢ়ে "পাঁচগাছি" করা হয় জমির উত্তর-পূর্ব তথা 'ইশান' কোনে৷
সেই পাঁচগাছি ধান "ডিনি আনা" হয় সমস্ত পাকা ধান কেটে আনার পর অগ্রহায়ণ সংক্রান্তি বা ছোটো মকরে৷
সেই ডিনি'র ধান নিয়ে স্থাপিত হয় "টুসু"৷ টুসু এত বড় একটা পরব বা পর্ব৷
টুসু পরব কুড়মিদের গুরুত্বপূর্ন একটি বড় পরব..কারন কুড়মিরা হচ্ছে কৃষিজীবী আর সেই কারনে কুড়মিদের সকল পরব হচ্ছে কৃষিভিত্তিক..আর টুসু পরব যে কৃষিভিত্তিক তা আমরা সহজেই বুঝতে পারছি কেননা 1)টুসু পাতা(স্থাপনা) হয় অগ্রহায়ন মাসের(কুড়মালিতে মাইসর মাস)শেষে খেতের সমস্ত ধান খামারে আনার পর..
2)ঘরের দিরখাতে মাটির সরাতে মেয়েরা কিছু ধান রেখে টুসু পাতে আর সারা পৌষ মাস চলে টুসুর আরাধনা..
3)ধান মাড়াই এর কাজ শেষ হওয়ার পর পৌষ মাসের শেষে সেই সরার ধানকে(আরাধ্য টুসু) চৌড়লে চাপিয়ে নদীর জলে বিসর্জন করা হয়..
তাহলে দেখা যাচ্ছে টুসু এখানে ধানকেই বলা হচ্ছে..টুসু কখনও মাটির পুতুল নয় বা কাগজের পুতুল হিসাবে দেখা উচিত নয়..
কারন কুড়মিদের কোনো দেব-দেবীর মাটির মূর্তি নেই..আর এই টুসুর আরাধনা বা স্থাপনার জন্য কোন মন্দিরের দরকার হয় না..চাষীর ক্ষেত থেকে খামার আর খামার থেকে ঘরেই টুসুর বাস..তাই তো টুসু এই কৃষিজীবী কুড়মিদের কখনও মা আর কখনও মেয়ে..কিন্তু ধানকেই যদি এই কুড়মি কৃষিজীবিরা টুসু হিসাবে আরাধনা করে তাহলে তাঁকে জলে বিসর্জন কেন ?কেননা ধানের বংশবৃদ্ধি হয় তখনি যখন জলের স্পর্শে আসে,তাই তো টুসুকে জলে বিসর্জন দেয়..
আমরাকে ভাবতে হবে সেই ধান চাষের আবিষ্কারের সমকালীন সময়ের ঘটনা যখন সেই কৃষিজীবী মানুষের কথা যারা প্রকৃতির কাছ থেকে ধানের বীজ আরোহন করে কৃষি করত..কিন্তু তখন তাঁরা জানত না ধানবীজ সংরক্ষনের..তাই তাঁরা প্রকৃতির কাছ থেকেই ধানবীজ আরোহন করে কৃষি করত...আর এই কারনেই তাঁরা পরিপুষ্ট ধানের মধ্যে কিছু ধান সেই প্রকৃতিকেই ফেরত দিত..সকলেই আনুষ্ঠানিক ভাবে জলে বিসর্জন দিত এই আশাই তাঁরা যেন পরবর্তী বছরেও চাষের জন্য বীজধান পায়..
টুসু "তুষ"শব্দ থেকে কখনও আসে নি কারন তুষ শব্দটি কুড়মালি শব্দ নয়...তুষকে কুড়মালিতে বলে ভুসা..কুড়মালিতে "টুসটুইসা" শব্দটি থেকে টুসু শব্দ আসাটাই স্বাভাবিক,কারন "টুসটুইসা" শব্দের বাংলা অর্থ হলো পরিপূর্ণ..কুড়মালিতে টুসু শব্দের সাথে সম্মন্ধযুক্ত আর একটি শব্দ হলো ঠুসল..এই ঠুসল শব্দের অর্থ হলো পরিপূর্ণ..তাই টুসু শব্দের অর্থ হচ্ছে "পরিপূর্ণ ধান", যা বংশবৃদ্ধি করতে সক্ষম..পরিশেষে বলা যায় টুসু হচ্ছে এমন এক শক্তি যে শক্তির দ্বারা কৃষিজীবি সহ সমগ্র মানবজাতির শক্তির সঞ্চার হয়..
তাই এই টুসুর পূজা তথা বিসর্জন করে যারা তাঁরাই কৃষির আবিষ্কর্তা-কুড়মি কৃষিজীবি..
জহার
তথ্য সূত্র:-ওয়েস্ট বেঙ্গল কুড়মালি একডেমি
লিখা:-বিপ্লব মাহাত ও ভূপেন মাহাত.
dada first line ti ami protham bolechhilam amaar bektigoto obhiggota theke....... kotha ti ekebarei ghanti chhilo..
ReplyDeleteApnar name ti o add kore debo.
Deleteজঁহার
THANK YOU..CONTINUE
DeleteKhub valo, bhupen da barsole kurmali pry school theke johar.
ReplyDelete